খুলনাঞ্চল

রোজার বাজার দখল করেছে অস্ট্রেলিয়ান ছোলা

বছরের এগারো মাস ছোলার চাহিদা থাকে না। থাকে শুধু রমজান মাসে। এ সময় মন্ত্রনালয়, ভোক্তা অধিকার, আমলা, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও ক্রেতার আলোচ্য সূচি এ পণ্য। মাস জুড়ে গণমাধ্যমের শিরোনাম ছোলা।

গত ১৫ বছর ধরে এ পণ্য নিয়ে খুলনায় এক চেটিয়া ব্যবসা করছে ভারত। এবারের রোজায় এখানকার ভারতের একক বাজার দখল করেছে অস্ট্রেলিন ছোলা। গেলবারের রোজায় ভারতীয় ছোলার তুলনায় অস্ট্রিলিয়ান ছোলা কেজি প্রতি গড়ে ২ থেকে ৫ টাকা কম দরে বিক্রি হচ্ছে।

আমদানি বাড়ানো ও মূল্য নিয়ন্ত্রনে রাখতে সরকার ভোজ্য তেল, ছোলাসহ বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক ছাড় দেয়। এতে আমদানিতে উৎসাহ বেড়েছে। পাশাপাশি ঋণপত্র খুলতে এখন মার্কিন ডলারের সংকট অনেকটা কেটেছে।

রমজানে খুলনার মোকামে সাধারণত১৫ হাজার মে.টন ছোলার চাহিদা থাকে। চাহিদার ৮০ শতাংশ ভারত থেকে আসত। শুল্ক ছাড় দেয়ায় অস্ট্রেলিয়া থেকে এ পণ্য আমদানি বেড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় ভারতীয় ছোলার মূল্য বেশি। ইতিমধ্যে খুলনার মোকামে অস্ট্রেলিয়ান ছোলার বড় চালান এসেছে। এ ক্ষেত্রে ভারত পিছিয়ে পড়েছে। আলু, পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের ন্যায় ছোলার বাজারে বড় ধরণের ধাক্কা খেতে যাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ।

এনবিআরের হিসেব মতে গেল ১-২৯ জানুয়ারি ১শ’ কোটি ডলার মূল্যের ইফতার সামগ্রীর আমদানী হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বেশি। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে চট্রগ্রাম বন্দরে ১২ লাখ মে.টন ইফতার সামগ্রী খালাস হয়েছে।

মহানরীর কালীবাড়ী রোড়স্থ মান্নান এন্ড ব্রাদার্সের সত্বাধিকারী জানান, গত বছর পযন্ত এ মোকামে ভারতীয় ছোলার এক চেটিয়া ব্যবসা ছিল। এ পাইকারী প্রতিষ্ঠানে গেল রমজানে ২ লাখ ২৬ হাজার কেজি ছোলা বিক্রি হয়। তখন দাম ছিল কেজি প্রতি ৮৭ থেকে ১০৮ টাকা। এবার অস্ট্রেলিয়ান ছোলা এসেছে। খুলনার বাজার সে দেশের ছোলা দখল করে নিয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরও কিছু ছোলা আমদানি হবে।

বড় বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদী স্টরের ম্যানেজার মো. রায়হান জানান, প্রতিযোগিতার বাজারে ভারত টিকতে পারছে না। গেল রমজানে প্রতি কেজি ছোলার পাইকারী ছোলার মূল্য ছিল ১০০ টাকা । এবার দাম কমালেও সে দেশের ছোলার চাহিদা কম। মূল্য কম হওয়ায় ক্রেতারা অস্ট্রেলিয়ান ছোলা বেছে নিয়েছে। শবে বরাতের পর আমদানি বাড়বে। মধ্য ফেব্ররুয়ারি থেকে দাম কমবে।

অপর এক সূত্র বলেছে , টিসিবি ছোলা বিক্রি শুরু করলে খোলা বাজারে চাপ কমবে। ছোলার পাশাপাশি বুটেরও চাহিদা আছে। এর প্রতি কেজি মূল্য ৫৫ টাকা। রমজানের দু’তিন দিন আগে ছোলা, বুট ও চিনির মূল্য কমবে।

বৃহৎ পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে, পাইকারি বাজারে সব ধরনের ডালের দাম কমলেও ছোলার দাম কমেনি। এক সপ্তাহ ধরে ছোলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে মান ভেদে ৯৫ থেকে ১১০ টাকায়। চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে একই ছোলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৩০-১৩৫ টাকা। অথচ রোজা শুরুর দেড় মাস আগে গত বছর পাইকারি বাজারে ছোলার কেজি ছিল ৭০-৭৫ টাকা। ২০২৩ সালে ৭৭-৮৫ টাকা, ২০২২ সালে ৭৩-৭৫ টাকা, ২০২১ সালে ৬০-৬৫ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছিল। এবারই সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে পণ্যটি।

দেশ বাংলা নিউজ

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button